সুদান

ঋণের বোঝার দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষে রয়েছে সুদান, দেশটির ঋণ-জিডিপির অনুপাত ২০২৫ সালে বেড়ে ২৫২%-এ দাঁড়িয়েছে—যা এমনকি জাপানকেও ছাড়িয়ে গেছে। দীর্ঘমেয়াদি সশস্ত্র সংঘাত, প্রাতিষ্ঠানিক খাতের ধস, এবং উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি ও জাতীয় মুদ্রার দরপতনের কারণে সৃষ্ট গভীর অর্থনৈতিক সংকট সুদানের পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলেছে। আন্তর্জাতিক অর্থায়নের সীমিত প্রবেশাধিকার এবং দুর্বল রাজস্ব ভিত্তি দেশটিকে প্রায় ধ্বংসের কিনারায় টেনে এনেছে। দেশটির আর্থিক দেউলিয়াত্ব ও পূর্ণাঙ্গ অর্থনৈতিক পতনের আশঙ্কা এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে।

জাপান

বিশ্বের অন্যতম উন্নত অর্থনীতির দেশ জাপান, তবুও দেশটির ঋণের পরিমাণ ২৩৪.৯%—যা যথেষ্ট চিন্তার বিষয়। দশকের পর দশক ধরে চলমান নমনীয় মুদ্রানীতি, যা মুলতূ কম মুদ্রাস্ফীতি ও বয়স্ক জনসংখ্যার বৃদ্ধির চাপ সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে গৃহীত হয়েছিল, তার ফলেই এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। যদিও বেশিরভাগ ঋণ ইয়েন-মূল্যধারিত এবং অভ্যন্তরীণ, যা হঠাৎ করে সংকটের সম্ভাবনা কমায়, তবুও মন্থর অর্থনীতি ও ক্রমবর্ধমান সামাজিক ব্যয়ের মধ্যে দেশটির দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক স্থিতিশীলতা নিয়ে প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে।

সিঙ্গাপুর

ঋণ-জিডিপি অনুপাত ১৭৪.৯% হলেও সিঙ্গাপুরের ক্ষেত্রে এটি আর্থিক অস্থিরতার নির্দেশক নয়। এই ঋণের বড় অংশই প্রয়োজনীয়—যা অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ তহবিল গঠনের জন্য ইস্যু করা হয়েছে, এবং পুরোপুরিভাবে বন্ধকী আইন মেনে নেয়া হয়েছে। সিঙ্গাপুরের অর্থনীতি বেশ স্থিতিশীল, দেশটির রিজার্ভও বেশ শক্তিশালী এবং রাজস্ব নীতি অত্যন্ত শৃঙ্খলাবদ্ধ। ফলে উচ্চ ঋণের পরেও ঝুঁকির পরিমাণ সামান্য এবং এখনো দেশটির শীর্ষস্থানীয় ক্রেডিট রেটিং বজায় রয়েছে।

গ্রিস

২০১০ দশকের তীব্র ঋণ সংকট পেরিয়ে এলেও গ্রিস এখনো বিশ্বের অন্যতম ঋণভারে জর্জরিত দেশ—দেশটির ঋণ-জিডিপি অনুপাত ১৪২.২%। বহু বছর ধরে কৃচ্ছতা নীতি ও কাঠামোগত সংস্কার চালানো হলেও, দেশটির মোট ঋণের বোঝা এখনো অনেক বেশি। তবে গ্রিসের বেশিরভাগ ঋণই আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহানুভূতিশীল ঋণ, যা স্বল্পমেয়াদে ঝুঁকি কিছুটা হ্রাস করে। তবুও, বয়স্ক জনসংখ্যা, ধীর প্রবৃদ্ধি এবং বহির্ভরশীল অর্থায়ন গ্রিসের দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক পুনরুদ্ধারে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বাহরাইন

১৪১.৪% ঋণ-জিডিপি অনুপাত নিয়ে বাহরাইন হলো উপসাগরীয় অঞ্চলের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অর্থনীতির দেশের একটি। দেশটির তেলের মজুত প্রতিবেশীদের তুলনায় কম, এবং বহিঋণে নির্ভরতা অনেক বেশি। মহামারির পরবর্তী সময়ে বাজেট ঘাটতি, সামাজিক ব্যয়ের ঊর্ধ্বগতি এবং নির্ধারিত বিনিময় হার বজায় রাখার চাপে ঋণের বোঝা আরও বেড়েছে। আশেপাশের উপসাগরীয় দেশগুলোর আর্থিক সহায়তা থাকলেও, বাহরাইনের দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত। দেশটির আর্থিক স্থিতিশীলতা নির্ভর করছে বহিরাগত সহায়তা ও বৈশ্বিক তেলবাজারের অস্থিরতার ওপর।