সোমবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
সোমবার, নিম্নমুখী প্রবণতার সাথে EUR/USD পেয়ারের ট্রেড করা হয়েছে এবং মার্কিন ডলারের মূল্য তুলনামূলকভাবে বেশ ভালোই বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা আগেও উল্লেখ করেছি যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট থাকলেও প্রতিদিন ডলারের দরপতন ঘটবে না—মাঝে মাঝে কারেকশন দেখা যাবে। তবে, ডলারের মূল্যের যেকোনো আকস্মিক বৃদ্ধি সাধারণত সন্দেহ এবং সতর্কতার সঙ্গে দেখা হয়।
গতকাল, ইউরোজোনে খুচরা বিক্রয় প্রতিবেদনের মোটামুটি নিরপেক্ষ ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে, আর জার্মানিতে শিল্প উৎপাদনের শক্তিশালী ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। সুতরাং, সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট অনুযায়ী ইউরোর দরপতনের বদলে ইউরোর দর বৃদ্ধির সম্ভাবনা ছিল। কোনো গুরুত্বপূর্ণ ফান্ডামেন্টাল ইভেন্ট ছিল না। ট্রাম্প তাঁর হুমকি-ধামকি অব্যাহত রেখেছেন এবং শুল্ক আরোপ করছেন বা বাড়িয়েছেন, আর ইলন মাস্ক "আমেরিকান পার্টি" গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। এই সব সংবাদ শিরোনাম ডলারকে শক্তিশালী করার জন্য যথেষ্ট ভিত্তি নয়। ফলে, আমরা মার্কেটের বর্তমান মুভমেন্টকে একটি টেকনিক্যাল কারেকশন হিসেবে দেখছি, যা খুব শক্তিশালী বা দীর্ঘস্থায়ী হবে না বলেই মনে হচ্ছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
সোমবার 5-মিনিটের টাইমফ্রেমে দুটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়। ইউরোপীয় সেশনে, এই পেয়ারের মূল্য 1.1740–1.1745 লেভেল ব্রেক করে নিম্নমুখী হয়, আর মার্কিন সেশনে ঠিক সেই লেভেল থেকেই নিচ থেকে রিবাউন্ড করে। এই দুটি সেল সিগন্যাল একে অপরের প্রতিলিপি ছিল, ফলে নতুন ট্রেডাররা কেবল একটি ট্রেডে এন্ট্রি করতে পারতেন। দিনের শেষে, পেয়ারটির মূল্য প্রায় 25–30 পয়েন্ট নিম্নমুখী হয়েছে—যা মুনাফা নিশ্চিত করার জন্য যথেষ্ট।
মঙ্গলবার কীভাবে ট্রেড করতে হবে:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, এখনো EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে, যদিও মূল্য অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইনটি ব্রেক করেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এই বিষয়টিই ডলারের নিয়মিত দরপতনের জন্য যথেষ্ট বলে মনে হচ্ছে। অবশ্যই, পর্যায়ক্রমে ডলারের মূল্যের কারেকশন হবে, তবে সামগ্রিক মৌলিক প্রেক্ষাপট অনুযায়ী আপাতত ডলারের মূল্যের কোনো শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী মোমেন্টামের প্রত্যাশা করা হচ্ছে না। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে সামষ্টিক প্রতিবেদনের ইতিবাচক ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে, কিন্তু সেটিও ডলারকে সহায়তা করেনি। এই সপ্তাহে, এই পেয়ারের মূল্য কিছুটা কমতে পারে, তবে মূল্য ডিসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করলে, পুনরায় দর বৃদ্ধির সংকেত পাওয়া যাবে।
মঙ্গলবার, EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে বা স্বল্প মাত্রার অস্থিরতার সাথে ট্রেড করা হতে পারে। সপ্তাহের দ্বিতীয় দিনের ট্রেডিংয়ে কোনো উল্লেখযোগ্য ইভেন্ট নির্ধারিত নেই।
5-মিনিট টাইমফ্রেমে গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হল: 1.1198–1.1218, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1561–1.1571, 1.1609, 1.1666, 1.1740–1.1745, 1.1808, 1.1851, 1.1908।
মঙ্গলবার, ইউরোজোন বা যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোনো সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের প্রকাশের কথা নেই। তবে, গতকাল ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রত্যাশামতো জাপান এবং সাউথ কোরিয়ার আমদানিকৃত পণ্যের উপর 25% শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
- গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য টিপস:
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।