সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের বিশ্লেষণ:
বৃহস্পতিবার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে। জার্মানি, ইউরোজোন, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রে মে মাসের সার্ভিস ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের বিজনেস অ্যাক্টিভিটি সূচক প্রকাশিত হবে। সহজেই অনুমান করা যায় যে চলমান বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধের মধ্যে ব্যবসায়িক কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নতির সম্ভাবনা নেই। যেকোনো পরিস্থিতিতেই, এই সূচকগুলো এতটা গুরুত্বপূর্ণ নয় যে মার্কেটের ট্রেডাররা হঠাৎ করে মার্কিন ডলার বিক্রি বন্ধ করে দেবে। ট্রেডারদের কাছে অন্যান্য প্রকাশিতব্য প্রতিবেদনগুলোর গুরুত্ব আরও কম। খুব কম ট্রেডারই জার্মানির বিজনেস ক্লাইমেট ইনডেক্স বা যুক্তরাষ্ট্রের নতুন আবাসন বিক্রির প্রতিবেদনের প্রতি আগ্রহ প্রদর্শন করবে।
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিশ্লেষণ:
বৃহস্পতিবারের ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের মধ্যে ফেডারেল রিজার্ভের প্রতিনিধি জন উইলিয়ামস, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লুইস দে গুইন্ডোস এবং ফ্র্যাঙ্ক এলডারসন, এবং ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের প্রতিনিধি স্বাতি ধিংগ্রা ও হিউ পিলের বক্তব্য অনুষ্ঠিত হবে। তবে, যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর নীতিগত অবস্থান ১০০% স্পষ্ট এবং মার্কেটের ট্রেডাররা এখন শুধুমাত্র একটি মাত্র বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করছে—তখন এই বক্তৃতাগুলোর কতটুকু গুরুত্ব রয়েছে?
আমাদের মতে, ট্রেডারদের কাছে এখনো একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধ, যা ধীরে ধীরে প্রশমিত হলেও এখনো চলমান। ডোনাল্ড ট্রাম্প একের পর এক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের ঘোষণা দিচ্ছেন, তবে এই খবর মার্কিন ডলারের জন্য খুবই দুর্বলভাবে সমর্থন দিচ্ছে। যদি ট্রাম্প নতুন করে শুল্ক আরোপ করেন, বিদ্যমান শুল্ক বৃদ্ধি করেন, বা অধিকাংশ দেশের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হন—তাহলে আরও জোরালোভাবে ডলারের দরপতন হতে পারে। এমনকি নতুন করে শুল্ক আরোপ ছাড়াও যদি মার্কেটের ট্রেডাররা ট্রাম্প ও গৃহীত নীতিমালার প্রতি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করে, তাতেও ডলার দরপতন হতে পারে।
উপসংহার:
সপ্তাহের শেষ দিকের ট্রেডিংয়ে EUR/USD ও GBP/USD উভয় পেয়ারের মূল্য যেকোনো দিকেই মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে। আজ বেশ কয়েকটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার কথা থাকলেও এগুলো এমন কোনো প্রতিবেদন নয় যা মার্কেটের বুলিশ প্রবণতাকে বিয়ারিশে রূপান্তরিত করতে পারে। এই সপ্তাহে আমরা দেখতে পেয়েছি, শক্তিশালী কারণ বা অনুঘটক ছাড়াও মার্কেটের ট্রেডাররা উভয় পেয়ারই ক্রয় করার ইচ্ছা দেখিয়েছে। এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা সহজেই আরও দীর্ঘায়িত হতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।