EUR/USD পেয়ারের 5-মিনিটের বিশ্লেষণ
মঙ্গলবার জুড়ে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূলত সাইডওয়েজ ট্রেডিং পরিলক্ষিত হয়েছে। সোমবারের তুলনায়, গতকাল ট্রেডারদের কাছে ডলার বিক্রির জন্য তেমন কোনো আনুষ্ঠানিক কারণ ছিল না—যদিও সাম্প্রতিক সময়ে তারা নিয়মিতভাবেই মার্কিন মুদ্রা বিক্রি করে চলেছেন। মনে করিয়ে দিচ্ছি, সোমবার মার্কিন ডলারের পতন ঘটেছিল যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেডিট রেটিং ডাউনগ্রেড এবং ফেডারেল রিজার্ভের সরকারি বন্ড ক্রয় বৃদ্ধির খবরে। যদিও এগুলো তুলনামূলকভাবে আনুষ্ঠানিক কারণ ছিল, বর্তমান মার্কেটে মার্কিন মুদ্রা বিক্রির জন্য যেকোনো অজুহাতই যথেষ্ট।
তবে মঙ্গলবার এই ধরনের আনুষ্ঠানিক কারণও ছিল না—তবুও ডলার আবারও শক্তিশালী হতে ব্যর্থ হয়েছে, যদিও অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু ছিল না। একইসাথে, ইউরোর মূল্য আবারও একই পরিস্থিতিতে নিয়মিতভাবে ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। এটি আবারও এই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে বাণিজ্যযুদ্ধ প্রশমিত হলেও ডলারের জন্য তা প্রত্যাশিত সমর্থন আনতে পারছে না।
বর্তমানে একটি অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন গঠিত হয়েছে এবং ডলার কেবল তখনই শক্তিশালী হবে যদি এই পেয়ারের মূল্য এই লাইনটির নিচে কনসোলিডেট করে। এর পাশাপাশি, এই পেয়ারের মূল্য এখন ইচিমোকু ইন্ডিকেটরের লাইনের ওপরে কনসোলিডেট করেছে, যা একটি নতুন বুলিশ প্রবণতার সূচনার ইঙ্গিত দেয়।
দিনভর পেয়ারটির মূল্যের ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা গেলেও দুটি শক্তিশালী ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়েছে। প্রথমত, মূল্য 1.1274 লেভেল থেকে নিখুঁতভাবে বাউন্স করেছে এবং এরপর 1.1224–1.1234 এরিয়া থেকেও রিবাউন্ড করেছে। উভয় ক্ষেত্রেই, সিগনালের যথার্থতার কারণে ট্রেডারদের কাছে মার্কেটে এন্ট্রি করার যথেষ্ট সুযোগ ছিল। এই পেয়ারের মূল্যের অস্থিরতার মাত্রা তুলনামূলকভাবে কম ছিল, তাই দুটি ট্রেড মিলিয়ে আনুমানিক মোট 40–50 পিপস লাভ হয়েছে।
COT রিপোর্ট
সর্বশেষ কমিটমেন্ট অব ট্রেডার্স (COT) রিপোর্ট ১৩ মে প্রকাশিত হয়েছে। উপরের চার্ট অনুযায়ী, নন-কমার্শিয়াল ট্রেডারদের নিট পজিশনের সংখ্যা দীর্ঘদিন ধরেই ঊর্ধ্বমুখী ছিল। বিক্রেতারা অল্প সময়ের জন্য মার্কেটে নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল, তবে দ্রুত তা হারিয়ে ফেলে। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে ধারাবাহিকভাবে ডলারের দরপতন হচ্ছে। যদিও বলা যাচ্ছে না এই প্রবণতা কতদিন চলবে, তবুও COT রিপোর্ট বড় ট্রেডারদের মানসিকতা প্রতিফলিত করে—যদিও বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই মানসিকতা দ্রুত পরিবর্তিত হতে পারে।
ইউরোর পক্ষে কোনো এমন কোনো মৌলিক কারণ নেই যা এটিকে শক্তিশালী করতে পারে, তবে ডলারের উপর রাজনৈতিক চাপ অনেক বেশি। আরও কয়েক সপ্তাহ বা মাস ধরে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের কারেকশন চলমান থাকতে পারে, তবে গত ১৬ বছরের দীর্ঘমেয়াদী নিম্নমুখী প্রবণতা এত সহজে বদলাবে না। একবার ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধ শেষ হলে, পুনরায় ডলারের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হতে পারে।
COT চার্টে লাল ও নীল লাইন আবারও একে অপরকে অতিক্রম করেছে, যা একটি নতুন বুলিশ প্রবণতার ইঙ্গিত দেয়। সর্বশেষ সাপ্তাহিক রিপোর্ট অনুযায়ী, নন-কমার্শিয়াল ট্রেডারদের লং পজিশনের সংখ্যা 15,400টি বেড়েছে, আর শর্ট পজিশনের সংখ্যা বেড়েছে 6,300টি। ফলে নিট পজিশনের সংখ্যা 9,000 কন্ট্রাক্ট বেড়ে গেছে।
EUR/USD পেয়ারের 1 ঘন্টার চার্টের বিশ্লেষণ
1-ঘণ্টার টাইমফ্রেমে, পুনরায় EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু করার প্রচেষ্টা পরিলক্ষিত হচ্ছে, কারণ মূল্য এখন ইচিমোকু লাইনের ওপরে অবস্থান করছে। মার্কিন ডলারের ভবিষ্যৎ এখনও বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধের পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে। যদি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় এবং শুল্ক হ্রাস পায়, তাহলে মার্কিন ডলার পুনরুদ্ধার করতে পারে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে, এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হওয়ার জন্য ইচিমোকু লাইনের নিচে এবং ট্রেন্ডলাইনের নিচে কনসোলিডেশন হওয়া প্রয়োজন। যদিও ডলারের দর বৃদ্ধির কিছুটা সম্ভাবনা এখনও বিদ্যমান, তবে ট্রেডাররা ট্রাম্পের পদক্ষেপের চেয়ে মুদ্রানীতির প্রতি বেশি আগ্রহী নয়, ফলে ডলারের দর বৃদ্ধির সম্ভাবনা বেশ দুর্বল।
২১ মে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হচ্ছে: 1.0823, 1.0886, 1.0949, 1.1006, 1.1092, 1.1147, 1.1185, 1.1234, 1.1274, 1.1321, 1.1426, 1.1534, এছাড়াও ইচিমোকু ইন্ডিকেটরের সেনকৌ স্প্যান বি (1.1224) এবং কিজুন-সেন (1.1209) লাইনগুলোর দিকেও নজর দেয়া উচিত। ইচিমোকু লাইনগুলো দিনের বেলা অবস্থান পরিবর্তন হতে পারে, তাই ট্রেডারদের সিগনাল মূল্যায়নের সময় এই লাইনগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা উচিত। প্রত্যাশিত নিয়ম অনুযায়ী, মূল্য সঠিক দিকের দিকে 15 পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন—এতে ভুল সিগনালের ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
বুধবার ইউরোজোন কিংবা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন বা ইভেন্ট নির্ধারিত নেই। ফলে, ট্রেডারদের মার্কেটের শক্তিশালী মুভমেন্টের আশা করা উচিত নয়। যদিও সোমবারের অভিজ্ঞতা বলছে, ছোটখাটো সংবাদও মার্কিন ডলারের বড় মুভমেন্ট ঘটাতে পারে, তবে এই ধরনের খবর প্রতিদিন আসে না। সে কারণে, আজকেও মার্কেটে স্বল্প মাত্রার অস্থিরতা এবং সাইডওয়েজ মুভমেন্ট অব্যাহত থাকতে পারে।
চিত্রের ব্যাখা:
- মূল্যের সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল – গাঢ় লাল লাইন; যেখানে মূল্যের মুভমেন্ট থেমে যেতে পারে। তবে এগুলো সরাসরি ট্রেডিং সিগন্যাল নয়।
- কিজুন সেন ও সেনকৌ স্প্যান বি লাইন – শক্তিশালী ইচিমোকু ইন্ডিকেটরের লাইন, যা ৪-ঘণ্টা চার্ট থেকে ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে স্থানান্তর করা হয়েছে।
- এক্সট্রিম লেভেল – হালকা লাল লাইন; যেখানে পূর্বে মূল্য রিবাউন্ড করেছে। এগুলো ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে।
- হলুদ লাইন – ট্রেন্ড লাইন, ট্রেন্ড চ্যানেল এবং অন্যান্য টেকনিক্যাল প্যাটার্ন নির্দেশ করে।
- COT ইন্ডিকেটর 1 – চার্টে প্রতিটি গ্রুপের ট্রেডারদের নিট পজিশনের পরিমাণ প্রদর্শন করে।