EUR/USD পেয়ারের 5-মিনিটের বিশ্লেষণ
সোমবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্য তুলনামূলকভাবে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের মতে, ঐদিন মার্কিন ডলারের হঠাৎ এমন দরপতনের পেছনে কোনো মৌলিক বা অর্থনৈতিক ভিত্তি ছিল না। তবে আগেই বলা হয়েছে, এখন মার্কেটে ডলার বিক্রি করার জন্য আর কোনো শক্তিশালী কারণের প্রয়োজন হয় না। মার্কিন গ্রিনব্যাক সহজেই এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে, বিপরীতে ইউরো এখনও শক্তিশালী অর্থনীতি বা ইসিবির হকিশ বা কঠোর নীতির দাবিদার হতে পারছে না। তবুও, বর্তমানে এসব বিষয়ের আর তেমন কোনো গুরুত্ব নেই। বাণিজ্যযুদ্ধ ব্যতীত অন্য কোনো কারণ এখন আর ডলারের ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক নয়। মাঝে মাঝে ডলার শক্তিশালী হয়, কিন্তু তা কেবল তখনই হয় যখন বাণিজ্য উত্তেজনা প্রশমনের খবর প্রকাশিত হয় — এবং এমন খবর প্রতিটি সপ্তাহে আসে না। এদিকে, মুডি'স কর্তৃক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেডিট রেটিং ডাউনগ্রেডের মতো সংবাদ ডলার বিক্রির কারণ হিসেবে কাজ করতে পারে।
টেকনিক্যাল দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা যাচ্ছে, আবার এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়েছে। প্রায় এক মাস ধরে এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী কারেকশন হয়েছে, তবে তিন মাসব্যাপী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এখনও অক্ষুণ্ন রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই, সবকিছু ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভবিষ্যৎ পদক্ষেপের উপর নির্ভর করছে। যদিও তার পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে অনুমান করা সম্ভব না, তবুও আমরা এটুকু বলতে পারি — এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এখনো কার্যকর রয়েছে।
সোমবারের ট্রেডিং সিগনালের ক্ষেত্রে, দুটি মুহূর্ত আলাদাভাবে উল্লেখযোগ্য: প্রথমত, 1.1185 লেভেল ব্রেকআউট করে মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট এবং দ্বিতীয়ত, 1.1274 লেভেলের নিচে দরপতন। প্রথম সিগনালে ট্রেডাররা লং পজিশন ওপেন করতে পারতেন, যা পরবর্তী সেল সিগনাল — অর্থাৎ 1.1274 এর নিচে দরপতনের সময় — ক্লোজ করা যেত। সেই পর্যায়ে শর্ট পজিশন ওপেন করে মূল্য সেনকৌ স্প্যান বি লাইনের কাছাকাছি থাকা অবস্থায় ক্লোজ করা যেত। অতএব, সোমবার দুটি ট্রেড ওপেন করা যেত এবং উভয় ট্রেডই উল্লেখযোগ্য মুনাফার সাথে ক্লোজ করা যেতো।
COT রিপোর্ট
সর্বশেষ কমিটমেন্ট অব ট্রেডার্স (COT) রিপোর্ট ১৩ মে প্রকাশিত হয়েছে। উপরের চার্ট অনুযায়ী, নন-কমার্শিয়াল ট্রেডারদের নিট পজিশনের সংখ্যা দীর্ঘদিন ধরেই ঊর্ধ্বমুখী ছিল। বিক্রেতারা অল্প সময়ের জন্য মার্কেটে নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল, তবে দ্রুত তা হারিয়ে ফেলে। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে ধারাবাহিকভাবে ডলারের দরপতন হচ্ছে। যদিও বলা যাচ্ছে না এই প্রবণতা কতদিন চলবে, তবুও COT রিপোর্ট বড় ট্রেডারদের মানসিকতা প্রতিফলিত করে—যদিও বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই মানসিকতা দ্রুত পরিবর্তিত হতে পারে।
ইউরোর পক্ষে কোনো এমন কোনো মৌলিক কারণ নেই যা এটিকে শক্তিশালী করতে পারে, তবে ডলারের উপর রাজনৈতিক চাপ অনেক বেশি। আরও কয়েক সপ্তাহ বা মাস ধরে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের কারেকশন চলমান থাকতে পারে, তবে গত ১৬ বছরের দীর্ঘমেয়াদী নিম্নমুখী প্রবণতা এত সহজে বদলাবে না। একবার ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধ শেষ হলে, পুনরায় ডলারের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হতে পারে।
COT চার্টে লাল ও নীল লাইন আবারও একে অপরকে অতিক্রম করেছে, যা একটি নতুন বুলিশ প্রবণতার ইঙ্গিত দেয়। সর্বশেষ সাপ্তাহিক রিপোর্ট অনুযায়ী, নন-কমার্শিয়াল ট্রেডারদের লং পজিশনের সংখ্যা 15,400টি বেড়েছে, আর শর্ট পজিশনের সংখ্যা বেড়েছে 6,300টি। ফলে নিট পজিশনের সংখ্যা 9,000 কন্ট্রাক্ট বেড়ে গেছে।
EUR/USD পেয়ারের 1 ঘন্টার চার্টের বিশ্লেষণ
1-ঘণ্টার টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং বর্তমানে মূল্য ইচিমোকু ইন্ডিকেটর লাইনগুলোর ওপরে অবস্থান করছে। মার্কিন ডলারের মূল্যের ভবিষ্যৎ মুভমেন্ট এখনো মূলত বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধ সংক্রান্ত পরিস্থিতির অগ্রগতির উপর নির্ভর করছে। যদি বাণিজ্য চুক্তিগুলো স্বাক্ষরিত হয় এবং শুল্ক কমানো হয়, তাহলে ডলারের পুনরুদ্ধার হতে পারে। অন্যথায়, কিংবা নতুন কোনো নেতিবাচক প্রভাবিক দেখা গেলে, ডলারের দরপতন অব্যাহত থাকার সম্ভাবনাই বেশি। বর্তমানে টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ ও মৌলিক প্রতিবেদন প্রভাব খুবই সীমিত — সবকিছু বাণিজ্য আলোচনা সংক্রান্ত সংবাদের উপর নির্ভর করছে।
২০ মে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.0823, 1.0886, 1.0949, 1.1006, 1.1092, 1.1147, 1.1185, 1.1234, 1.1274, 1.1321, 1.1426, 1.1534। ইচিমোকু লাইন: সেনকৌ স্প্যান বি (1.1224), কিজুন-সেন (1.1193)। লক্ষ্য রাখতে হবে যে ইচিমোকু লাইনগুলো দিনের বেলা অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে এবং ট্রেডিং সিগনাল নির্ধারণের সময় তা বিবেচনায় নেওয়া উচিত। একইসাথে মনে রাখতে হবে, মূল্য সঠিক দিকের দিকে 15 পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করার পর ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত, যাতে সম্ভাব্য ভুল সিগনাল থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোজোনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনের প্রকাশনা বা ইভেন্ট নির্ধারিত নেই। ফলে দিনের বেলায় ট্রেডারদের প্রতিক্রিয়া জানানোর মতো কিছুই থাকবে না। তবে সোমবারের অভিজ্ঞতা থেকে আবারও দেখা গিয়েছে যে এমনকি স্বল্প গুরুত্বসম্পন্ন সংবাদের প্রভাবেও ডলারের উল্লেখযোগ্য দরপতন ঘটতে পারে। কিন্তু এমন প্রভাবশালী সংবাদ প্রতিদিন আসে না, তাই আজ দুর্বল ও সাইডওয়েজ মুভমেন্টের সম্ভাবনাই বেশি।
চিত্রের ব্যাখা:
- মূল্যের সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল – গাঢ় লাল লাইন; যেখানে মূল্যের মুভমেন্ট থেমে যেতে পারে। তবে এগুলো সরাসরি ট্রেডিং সিগন্যাল নয়।
- কিজুন সেন ও সেনকৌ স্প্যান বি লাইন – শক্তিশালী ইচিমোকু ইন্ডিকেটরের লাইন, যা ৪-ঘণ্টা চার্ট থেকে ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে স্থানান্তর করা হয়েছে।
- এক্সট্রিম লেভেল – হালকা লাল লাইন; যেখানে পূর্বে মূল্য রিবাউন্ড করেছে। এগুলো ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে।
- হলুদ লাইন – ট্রেন্ড লাইন, ট্রেন্ড চ্যানেল এবং অন্যান্য টেকনিক্যাল প্যাটার্ন নির্দেশ করে।
- COT ইন্ডিকেটর 1 – চার্টে প্রতিটি গ্রুপের ট্রেডারদের নিট পজিশনের পরিমাণ প্রদর্শন করে।